সংখ্যা ৭০ থেকে

চিরশায়িত কবিতা

মনজুরুল আহ্সান


কোথাও আলোকসজ্জা দেখলে আমার অত্যন্ত অবাক লাগে। আমি

সতর্ক বেজীর মতো হয়ে যাই। গন্ধ শুঁকি। বোঝার চেষ্টা করি-

-তাহলে উত্তরের বাতাস!! বয়ে নিয়ে আসছো তুমি কোন প্রশ্নের উত্তর?

যাবতীয় বস্তুর ওপরে সেই কম্পমান আলো।

ভূতের বাচ্চারা খেলাধুলা করছে দূরে, ধুপের গন্ধ জমেছে যেখানে

প্রাচীরের ধার ঘেঁষে, হি হি করে হাসছে

আর একটু পরে পরে

একে অপরের শরীরের ভিতরে, ঢুকে যাচ্ছে…

তারা চেনে না আমাকে। পেশা বা বয়সও জানে না

তবু সূক্ষ্মভাবে লক্ষ রাখে

কোনোদিন, কাউকে তারা বিশ্বাস করে না।

 

অথচ আমার নিকটে কোনো অস্ত্র নাই ভাই!

এই বাণীঅর্চনার রাতে হেঁটে যেতে যেতে, পূর্ব আকাশের দিকে

কাদা কাদা অন্ধকার দেখা যায়

এবং সেখান থেকে সংকেত পাই আমি।

দিকচক্রবাল হতে শত শত মুখ দাঁত বের করে বলে-

বন্ধু! কখনোই সমাপ্ত হবে না এই উৎসবরজনী

 

মাঘের ছায়ার ভিতরে, ধাতু ও কাঠের তৈরি ইঁদুরের

দৌড়াদৌড়ি দেখি তাই । কোনোকিছুর জন্য অপেক্ষাও করি না।

এরইমাঝে প্রচুর ক্রেতারা এসে

মেলার সকল পুতুল ও বাতাসা কিনে খেয়ে ফ্যালে।

অতিথিরা, বমনক্রিয়ার পরে নিদ্রা যায়…

তারপরে

অনেক বিগত কালের পরে

নিশ্চল মাছের মতো চক্ষুর ভিতরে ওই দাঁতগুলি ভাবে-

এরকম আলোকসজ্জার জন্য তাহলে অনেক পয়সা লাগে?

 

অথচ আমার নিকটে কোনো পয়সা নাই ভাই!

অদৃশ্য ইন্দ্রিয় দিয়ে শুনি- সকল সঙ্গীত অত্যন্ত অদ্ভুতভাবে

উল্কাপাতের পর বেজে ওঠে। সম্পূর্ণ অচেতন আমি

সম্ভবত স্বপ্নের ভিতরে, দেখি-

কালোফড়িঙের ঝাঁক আর মানুষেরা

উড়ে যাচ্ছে হলুত সরিষাক্ষেত পার হয়ে-

(সংখ্যা ৭০, বৃহস্পতিবার, ৫ ফাল্গুন, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯)

Posted in মনজুরুল আহ্সান | Tagged , , , | এখানে আপনার মন্তব্য রেখে যান